আগস্ট ৫, ২০১৯
পাটকেলঘাটায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা
পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটায় অপরিকল্পিত ভবন-বাড়িঘর নির্মাণ করায় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। স্বাভাবিক বৃষ্টির পানি প্রবাহের গতি পথ না থাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পাটকেলঘাটা বাজারসহ আশে পাশের গ্রামগুলোতে। বহুদিন থেকে বর্ষার মৌসুমে বাজারের বৃষ্টির পানি বাজারের পূর্ব দিকের নালা-ড্রেন দিয়ে কপোতাক্ষ নদীতে পড়ত। বিপরীত দিকের পানি গরু হাটা ড্রেন দিয়ে বাইগুনি হয়ে শাকদহা বিলে পড়ত। আবার পশ্চিম দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহা সড়কের দু’ধারের নালা দিয়ে বৃষ্টির পানি শাকদাহ, বড়বীলা ও সরুলিয়া খাল হয়ে তীব্র স্রোত আকারে পানির কিছু অংশ কপোতাক্ষে পড়ত, কিছু অংশ ভৈরব নগর সুইচ গেট হয়ে বেতনা নদী, শালিখা নদীতে পড়ত। পাটকেলঘাটা বাজারের কিছু অংশের পানি বল ফিল্ডের ধার দিয়ে বেয়ে এসে কালিপদ সাধুর বাড়ির পাশ দিয়ে ড্রেন বেয়ে মজুমদার ফিলিং স্টেশনের সুইচ গেট হয়ে সোবহান হাজীর জমির পাশ ঘেঁষে যুগিপুকুরিয়া হয়ে তৈল কুপি বিলে পড়ত। অথচ পানির এসব স্বাভাবিক চলার পথ এখন প্রায় রুদ্ধ। এলাকার সামগ্রিক স্বার্থ চিন্তা না করে ব্যক্তি স্বার্থে অপরিকল্পিত দোকান পাঠ, বিল্ডিং বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধের পথে। কোথাও কোথাও ড্রেন থাকলেও নানা বর্জ্য পদার্থ ফেলে সেগুলো ভরাট করে ফেলেছে। কেউ কেউ নামকাওয়াস্তে ড্রেন রাখলেও বড় ড্রেনগুলো সরু করে ফেলেছে। বর্তমানে খুলনা সাতক্ষীরা মহা সড়কের দু ধারে ড্রেন এখন নেই বললেও চলে। নালা-ড্রেন মাটি দিয়ে ভরাট করে দোকানপাট সহ বিভিন্ন স্থাপনা করেছেন ভুমি দস্যুরা। পাটকেলঘাটার পশ্চিম পাড়া এলাকার যে পানি পাটকেলঘাটা হারুণ অর রশিদ কলেজের সামনে দিয়ে যে জনগুরুত্বপূর্ণ পানির ড্রেনটি দিয়ে শাকদাহ বিলে পড়ত, সে ড্রেনটির উপর মাটি ভরাট করে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করছে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল। এদিকে বাজরের বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী বিদ্যুৎ রোড, ডাকবাংলো রোড, টাওয়ার রোড, গরু হাটা রোডগুলির ড্রেনেজ ব্যবস্থা না রেখে অপরিকল্পিত দোকানপাঠ, বসতবাড়ি নির্মাণ করায় বর্ষার মৌসুমে এ রোডে হাটু পানি জমে থাকে, কোথাও কোথাও রাস্তাটির এমন অবস্থা হয় যেন পার হতে গেলে নৌকার প্রয়োজন হয়। এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটার হারুণ অর রশিদ কলেজের অধ্যাপক সুব্রত দাশ বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা দেখেছি আমার বাড়ির সামনে দিয়ে তীব্র আকারে ড্রেন দিয়ে পানি বের হয়ে যেত, সেই ড্রেন আমরা বজায় রাখলেও অধিকাংশরা মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে। ইদানীং মজুমদাররা পানির ড্রেনের মোটা পাইপ তুলে দিয়ে চিকন পাইপ লাগিয়েছে। ফলে মারাত্মক জলাবদ্ধতার শিকার হতে হবে আমাদের। পাটকেলঘাটার কুমিরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পাটকেলঘাটার বাসিন্দা নেছার আলী বলেন, আমাদের পশ্চিম পাড়ার বর্ষার পানি যে পথ দিয়ে প্রবাহিত হত অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি চলার সে স্বাভাবিক পথ আজ ব্যাহত হচ্ছে। সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোতিয়ার রহমান জানান, ভারতে যেমন ভবন নির্মাণ করতে হলে পঞ্চায়েতের অনুমতি লাগে আমাদেরও তেমন আইন করতে হবে। তালা উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ মো: জসিমের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, উপজেলা লেভেলেও ভবন নির্মাণ করতে হলে স্থানীয় সরকারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু নিয়ম বলবৎ না থাকায় ভবিষ্যতে সবাই কে হুমকির মধ্যে পড়তে হবে। তবে প্রপার ল্যান্ড রিমারকেশান না থাকায় আমাদের পদক্ষেপ নিতে জটিলতায় পড়তে হয়। যদি কেউ সরকারী জায়গার উপর ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে থাকে অভিযোগ পেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় তা গুড়িয়ে দেয়া হবে। 8,591,177 total views, 7,863 views today |
|
|
|